শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাথমিক গোষ্ঠীর ভূমিকা :-
১. প্রাথমিক গোষ্ঠীকে ব্যক্তিত্ব বিকাশের মুক্তাঙ্গন হিসাবে গণ্য করা হয়। পরিবার , বন্ধুগোষ্ঠী প্রভৃতি সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে ব্যক্তি যে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় অংশ নেয় , ব্যক্তিত্ব গঠনে এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২. প্রাথমিক গোষ্ঠীর অভ্যন্তরেই ব্যক্তির আপন সত্তা প্রকাশিত হয়। ব্যক্তি সম্পর্কভিত্তিক এই প্রাথমিক গোষ্ঠীগুলিতে ব্যক্তির অন্তর্নিহিত সম্ভাবনাগুলির বিকাশ ও প্রকাশ ঘটে।
৩. প্রাথমিক গোষ্ঠীগুলি সমাজের অপরিহার্য বুনিয়াদ। পরিবার বা প্রাথমিক গোষ্ঠীর মধ্যে শিশু প্রথম জন্মগ্রহণ করে। পরিবারের মধ্যেই শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকশিত হতে শুরু করে। পরিবার খেলাধুলার সংস্থা বা ক্লাব , বন্ধুগোষ্ঠী ইত্যাদি প্রাথমিক গোষ্ঠীরূপে সামাজিকীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪. প্রাথমিক গোষ্ঠীগুলি সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। এই গোষ্ঠীগুলি সংস্কৃতির সঞ্চালনায় ও অন্যান্য ভূমিকা পালন করতে থাকে। ব্যক্তির জন্মের পর সচেতনতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য সমাজস্বীকৃত আচার-আচরণ , আদব-কায়দা , মূল্যবোধ , ন্যায়-অন্যায় ইত্যাদি সম্বন্ধে ধারণা প্রাথমিক গোষ্ঠী থেকেই আয়ত্ত করে থাকে।
৫. ম্যাকাইভার ও পেজ - এর মতে প্রাথমিক গোষ্ঠী হিসেবে পরিবার শিশুকে সমাজের জটিল রহস্যের সন্ধান দেয় এবং সমবয়সীদের নিয়ে গঠিত গোষ্ঠীগুলি শিশুর সামাজিক আবেগকে সৃষ্টিশীল প্রকাশে সাহায্য করে।
৬. শিশুর মনস্তাত্ত্বিক চাহিদা , বাসনা , নিকট সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রবণতা ইত্যাদি চরিতার্থ করতে প্রাথমিক গোষ্ঠী বিশেষভাবে সহায়তা করে।
৭. প্রাথমিক গোষ্ঠীর মাধ্যমেই শিশুর মধ্যেকার প্রেম - প্রীতি , ভালোবাসা , মমতা প্রভৃতি আবেগময় ও কোমল বৃত্তিগুলি বিকশিত হয়ে ওঠে। ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে এই কোমল বৃত্তিগুলি অতি গুরুত্বপূর্ণ।
৮. প্রাথমিক গোষ্ঠীর আন্তরিক মমত্ববোধ ও প্রীতিপূর্ণ পরিবেশ শিশুদের স্বার্থপরতার মনোভাব পরিবর্তনে সহায়তা করে। শিশুরা ''আমি'' সর্বস্ব চিন্তা-চেতনা প্রাথমিক গোষ্ঠীর মাধ্যমে ''আমরা'' মনোভাবে রূপান্তরিত হয়।