বাংলার ইতিহাসে ইলিয়াস শাহি বংশের ভূমিকা নির্ণয় করাে।
বাংলার ইতিহাসে ইলিয়াস শাহি বংশের ভূমিকা
বাংলার ইতিহাসে ইলিয়াস শাহের শাসনকাল মহম্মদ-বিন-তুঘলকের আমলে বাংলায় ইলিয়াস শাহি বংশের শাসন (১৩৪২-১৪৮৭ খ্রি.) শুরু হয়। ১৩৪২ খ্রিস্টাব্দে সামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ (১৩৪২-১৩৫৮ খ্রি.) বাংলা। অর্থাৎ লক্ষ্মণাবতীর সিংহাসনে বসেন এবং নিজেকে স্বাধীন সুলতানরুপে ঘােষণা করেন। ১৩৪২ থেকে ১৪১৫ খ্রিস্টাব্দ এবং ১৪৪২ থেকে ১৪৮৭ খ্রিস্টাব্দ—এই দুটি পর্বে ইলিয়াস শাহি বংশের বিভিন্ন শাসক বাংলায় রাজত্ব করেন।
বাংলায় অগ্রগতি
বাংলার ইতিহাসে ইলিয়াস শাহি বংশের শাসনকাল ছিল এক গৌরবময় যুগ। এই বংশের আমলে বাংলায় কৃষি, শিল্প, ব্যাবসাবাণিজ্য প্রভৃতির। অগ্রগতি ঘটে। এই সময়ের বাংলাকে ইবন বতুতা ‘প্রাচুর্যের দেশ’ বলে উল্লেখ করেছেন। এই সময় উড়িষ্যার চিল্কা থেকে নেপালের কাঠমাণ্ডু এবং পূর্বদিকে কামরূপ। পর্যন্ত বাংলার রাজ্যসীমা বিস্তৃত ছিল। ইতিহাসবিদ ড. জে এন সরকার তাই মন্তব্য করেছেন যে, ইলিয়াস শাহ বাংলার সিংহাসনে বসার পর থেকে বাংলার ইতিহাসে এক নবযুগের সূচনা হয়েছিল। সুলতানদের উদ্যোগের ফলে এই সময় বাংলায় রাজনৈতিক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সূচনা ঘটে। তাদের পৃষ্ঠপােষকতায় বাংলার সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে যথেষ্ট সৃষ্টিধর্মীতার প্রকাশ ঘটেছিল। ইলিয়াস শাহের আমলে রাজধানী পান্ডুয়া শিল্প ও স্থাপত্যের অন্যতম প্রধান কেন্দ্রে পরিণত এক নবযুগের সূচনা হয়েছিল। বিভিন্ন শিল্প, স্থাপত্য, ভাস্কর্য, সাহিত্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে ইলিয়াস শাহি আমলে।
ইলিয়াস শাহি বংশের রাজনৈতিক অবদান
ইলিয়াস শাহি আমলে বাংলায় রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অগ্রগতি ঘটে এবং স্থিরতা আসে। দিল্লির অধীনতা ছিন্ন করে একদিকে যেমন স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়, অন্যদিকে তেমনি সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ ঘটে এবং বহিবিশ্বের সঙ্গে যােগাযােগ স্থাপিত হয়।
(১) স্বাধীন রাজ্য স্থাপন
দিল্লি সুলতানির একাধিপত্যের সময়ে দিল্লির অধীনতা ভিন্ন করে বাংলার সুলতান ইলিয়াস শাহ যেখানে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কুতুবউদ্দিনের সময় থেকে ফিরােজ তুঘলকের সময়কাল পর্যন্ত দিল্লির বিভিন্ন সুলতান বাংলায় তাদের আধিপত্য রক্ষার চেষ্টা করেছেন। গিয়াসউদ্দিন তুঘলক বাংলাকে লক্ষ্মণাবতী, সাতগাঁও ও সেনারগাঁও—এই তিনটি প্রশাসনিক অঞ্চলে বিভক্ত করে তিনজন পৃথক প্রশাসক নিয়ােগ করেন। এভাবে বাংলার রাজনৈতিক ঐক্যকে ধ্বংস করা হয়। কিন্তু মহম্মদ-বিন-তুঘলকের আমলে ইলিয়াস শাহ লক্ষ্মণাবতীর সিংহাসনে বসে একে একে তিনটি অংশেই নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন। ইলিয়াস শাহি আমলেই বাংলায় সুষ্ঠু শাসনব্যবস্থা গড়ে ওঠে।
(২) রাজ্যবিস্তার
বাংলায় একাধিপত্য প্রতিষ্ঠার পর ইলিয়াস শাহ বিহার, উড়িষ্যা, বারাণসী, গােরক্ষপুর, চম্পারণ, আসাম, কামতা রাজ্য প্রভৃতি স্থানে বাংলার আধিপত্য স্থাপন করেন। তিনি নেপালেও অভিযান পাঠান। তিনি দিল্লি অভিযানেরও স্বপ্ন দেখতেন। এভাবে ইলিয়াস শাহি রাজারা যুদ্ধবিগ্রহের মাধ্যমে বাংলার রাজ্যসীমা বহুদূর বিস্তৃত করেন। এই বিস্তারের ফলে লক্ষ্মণাবতি বা লখনৌতির রাজ্য বাংলার রাজ্যে পরিণত হয়।
(৩) বৈদিশিক সম্পর্ক
ইলিয়াস শাহি আমলে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চিনের সম্রাট য়ুংলাে গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের দরবারে মা-হুয়ান নামে এক চিনা দূতকে পাঠিয়েছিলেন। গিয়াসউদ্দিনও মহারত্ন ধর্মরাজ নামে এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে চিনে পাঠিয়েছিলেন। পারস্যের কবি হাফেজের সঙ্গে সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের পত্রালাপ হয়েছিল। এ ছাড়া জৌনপুর, পারস্য, মদিনা প্রভৃতি অঞলেও বাংলার ইলিয়াস শাহি সুলতানগণ দূত পাঠান।
ইলিয়াস শাহি বংশের সামাজিক অবদান
সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলায় ইলিয়াস শাহি বংশের অবদান বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় একদিকে যেমন বাংলার ইসলামের প্রসার ঘটেছিল, অন্যদিকে শাসনব্যবস্থায় ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় ছিল।
(১) ধর্মনিরপেক্ষতা
ইলিয়াস শাহি শাসকগণ বাংলার সমাজব্যবস্থায় এক ধর্মনিরপেক্ষ পরিবেশ তৈরি করেন। ড. আবদুল করিম বলেছেন যে, ইলিয়াস শাহ শুধু মুসলিমদের সুলতান ছিলেন না—তিনি হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সকল বাঙালির সুলতান ছিলেন। তার সময়ে রাজকর্মচারী ও সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদে বহু যােগ্য হিন্দুকে নিয়ােগ করা হয়। অনেক হিন্দু ব্যক্তিত্ব বরবক শাহের সভায় স্থান পেয়েছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযােগ্য ছিলেন ছিলেন কেদার রায়, ভাদসী রায়, বিশ্বাস রায়, মুকুন্দস সুনন্দ, নারায়ণ দাস, জগদানন্দ রায়, গন্ধর্ব রায়, অনন্ত সেন, কলধর প্রমুখ। সুলতান বরবক শাহ কলধরকে ‘শুভরাজ খাঁ’ উপাধি দেন। মুকুন্দ ছিলেন রাজপণ্ডিত এবং অনন্ত সেন ছিলেন রাজচিকিৎসক। ইলিয়াস শাহ এভাবে বাংলায় এক ধর্মনিরপেক্ষ শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন করেছিলেন। যদিও অনেক ইতিহাসবিদ বলেছেন যে, এই ধর্মনিরপেক্ষতা অবিমিশ্র ছিল না। যেমন, গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের মতাে শাসকের লােকরঞ্জন চরিত্র তার প্রচ্ছন্ন ধর্মীয় অনুদারতার জন্য কিছুটা নিষ্প্রভ হয়ে গেছে। তার আমলে মুসলিমদের প্রতি কিছুটা পক্ষপাতিত্ব দেখানাে হয়েছিল। ইলিয়াস শাহি রাজবংশ সম্পর্কে ইতিহাসবিদ ড. হাবিবুল্লা বলেছেন যে,এই রাজবংশ বাংলার রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গিয়েছিল।
(২) হিন্দু মধ্যবিত্ত শ্রেণির উত্থান
ইলিয়াস শাহি আমলে মুসলিম শাসনের প্রভাব শহরাঞলেই আবদ্ধ ছিল। গ্রামে তখনও শাসন পরিচালনা ও রাজস্ব আদায়ের কাজে হিন্দু জমিদার ও গ্রামপ্রধান এই ভূমিকা পালন করতেন। এর ফলে গ্রামের হিন্দু শাসকবর্গ ও শহরের হিন্দু আমলাদের সমন্বয়ে বাংলায় নতুন হিন্দু মধ্যবিত্ত শ্রেণির উত্থান ঘটে। এই সম্প্রদায় আর্থিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে যথেষ্ট সমৃদ্ধশালী ছিল।
(3) ইসলামের প্রসার
ইলিয়াস শাহি শাসনকাল ছিল বাংলায় মুসলিম ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রসারের যুগ। গ্রামবাংলায় মুসলিম মােল্লারা ইসলামের বাণী ও আদর্শ প্রচার করেন। সুফিবাদী সাধকরাও বাংলার গ্রামাঞ্চলে ইসলামের বাণী প্রচারে নামেন। এই সময় হিন্দুধর্মে নিম্নবর্ণের মানুষ সামাজিকভাবে খুবই অবহেলিত ও নির্যাতিত ছিল। ইসলামের সাম্য ও শান্তির বাণী তাদের আকৃষ্ট করে। ফলে নিম্নবর্ণের প্রচুর হিন্দু এই সময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। বাংলার গ্রামগুলিতে মসজিদ, মাদ্রাসা, মক্তব প্রভৃতি থাপিত হয়। ফলে গ্রামে ইসলামীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতি প্রসারের কাজ সহজ হয়। এভাবে গ্রামবাংলায় ইসলাম ধর্মের প্রসার ঘটে।
ইলিয়াস শাহি বংশের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অবদান
ইলিয়াস শাহি বংশের শাসনকাল বাংলা ভাষা, সাহিত্য, শিল্পকলা ও শিক্ষার বিকাশের যুগ হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।
(১) বাংলা ভাষার অগ্রগতি
ইলিয়াস শাহি আমলে দিল্লি ও উত্তর ভারতের সংস্কৃতির প্রভাবমুক্ত হয়ে বাংলায় সম্পূর্ণ নিজস্ব সংস্কৃতি বিকশিত হতে শুরু করে। চর্যাপদের যুগের শৈশব কাটিয়ে বাংলা এ সময় শ্রীকৃয়কীর্তন’ কাব্যের যুগে পৌঁছায়। ইলিয়াস শাহি শাসক শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ, সিকান্দার শাহ, গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ, বরবক শাহ প্রমুখ সুলতান বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশে উল্লেখযােগ্য ভূমিকা পালন করেন।
(২) সাহিত্যের অগ্রগতি
ইলিয়াস শাহি রাজাদের আমলে লক্ষ্মণাবতী, গৌড় ও পাণ্ডুয়া বাংলার সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়।
(১) ইলিয়াস শাহি বংশের সুলতান বরবক শাহ সাহিত্যের অনুরাগী ছিলেন। তিনি ‘অল-ফাজিল’ ও ‘অল-কামিল’ উপাধি গ্রহণ করেন। তিনি বৃহস্পতি মিশ্র, কৃত্তিবাস ওঝা, ইব্রাহিম কায়ুম ফারুকি প্রমুখের পৃষ্ঠপােষকতা করেন। তার সভাপণ্ডিত বৃহস্পতি মিশ্র সংস্কৃত ভাষায় অমরকোষ-এর টীকা পদচন্দ্রিকা রচনা করেন। এ ছাড়া, তিনি পীতগােবিন্দ, শিশুপালবধ, কুমারসম্ভব, রঘুবংশ প্রভৃতি গ্রন্থের টীকাও রচনা করেন। এজন্য তিনি ‘পণ্ডিত সার্বভৌম’ উপাধি লাভ করেন।
(২) বরবক শাহের আমলে মালাধর বসু শ্রীকৃয়বিজয় নামে বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন। বরবক শাহ মালাধর বসুকে ‘গুণরাজ খা’ এবং তার পুত্রকে ‘সত্যরাজ খাঁ’ উপাধি দেন। কবি কৃত্তিবাস ওঝা এই সময় বরবক শাহের পৃষ্ঠপােষকতায় বাংলা রামায়ণ অর্থাৎ শ্রীরাম পাঁচালী রচনা করেন। বরবক শাহের সভাকবি ছিলেন ফারসি পন্ডিত ইব্রাহিম কায়ুম ফারুকি। তিনি ফারসি ভাষায় বিখ্যাত শফরনামা গ্রন্থ রচনা করেন। বরবক শাহের আমলের বিখ্যাত পদাবলি কবি ছিলেন চণ্ডিদাস। তিনি বৈয়ব পদাবলি সাহিত্যে তাঁর চিরকালীন অবদান রেখেছেন। ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেছেন যে, বাংলার সুলতানদের মধ্যে রুকুনদ্দিন বরবক শাহ নানা দিক থেকে শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করতে পারেন।
(৩) মিথিলার অমর কবি বিদ্যাপতি গিয়াসউদ্দিনের সমসাময়িক ছিলেন। তিনি মৈথিলি কোকিল’ নামে পরিচিত। কবি বিজয় গুপ্ত জালালউদ্দিন ফতে শাহের আমলে ‘পদ্মপুরাণ’ নামে মনসামঙ্গল’ ধারার কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন। ইলিয়াস শাহি যুগে স্বর্ণমুদ্রাতেও উন্নত শিল্পকলার নিদর্শন পাওয়া যায়।
(৩) শিক্ষায় অগ্রগতি
ইলিয়াস শাহি রাজাদের আমলে শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রগতি লক্ষ করা যায়। শহর এবং গ্রামবাংলায় বিভিন্ন মাদ্রাসা ও মক্তব প্রভৃতি স্থাপিত। হয়। ইলিয়াস শাহি সুলতানরা মক্কা এবং মদিনায় মাদ্রাসা ও মক্তব প্রতিষ্ঠা করেন। ইউসুফ শাহ একটি উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন।
(৪) শিল্প-স্থাপত্যের উৎকর্ষ
ইলিয়াস শাহি আমলে বাংলার শিল্প-স্থাপত্যে যথেষ্ট উল্কর্য লক্ষ করা যায়। এই সময়ের অন্যতম শিল্প-কীর্তি হল মালদহের পাণ্ডুয়ার আদিনা মসজিদ। সিকান্দার শাহের আমলে ১৩৬৮ খ্রিস্টাব্দে আদিনা মসজিদটি নির্মিত হয়। ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেছেন যে, স্থাপত্য-কৌশলের বিচারে এই মসজিদটি অতুলনীয়। ভারতবর্ষে নির্মিত সমস্ত মসজিদের মধ্যে আদিনা মসজিদ আয়তনের দিক থেকে দ্বিতীয়। এ ছাড়া, আখ-ই সিরাজউদ্দিন, কোতােয়ালি দরওয়াজা হুগলির মােল্লা, সিমলা, মােল্লা আতার মসজিদ এবং অন্যান্য সৌধ তিনি নির্মাণ করেন। হাজি ইলিয়াস শাহ হাজিপুরে একটি শহর প্রতিষ্ঠা করেন। শামসুদ্দিন ইউসুফ শাহ যেসব সৌধ নির্মাণ করেন সেগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল জামি মসজিদ, গৌড়ের লােটন মসজিদ, চামকাটি মসজিদ, তাঁতিপাড়া মসজিদ, হুগলির বাইশ দরওয়াজা মসজিদ প্রভৃতি।
উপসংহার
বাংলার সামাজিক জীবনের অগ্রগতি, রাজনৈতিক বিকাশ, শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশ প্রভৃতি ক্ষেত্রে ইলিয়াস শাহি আমলে এক নতুন অধ্যায় রচিত হয়েছিল। বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও শিক্ষার অগ্রগতি এযুগের কৃতিত্বপূর্ণ অবদান। এজন্য ইতিহাসবিদ ড. আবদুল করিম বলেছেন, “বাংলার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসে ইলিয়াসে ইলিয়াস শাহি সুলতানদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকিবে।”